আলমাস হোসেনঃ ঢাকা জেলা প্রতিনিধি
ঢাকার কেরানীগঞ্জে ঈদের ছুটিতে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বন্ধ থাকায় সিকিউরিটি গার্ডদের আটকে রেখে প্রায় কোটি টাকার মালামাল লুটের ঘটনায় এক নারীসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া মালামালসহ দুটি কাভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে, বুধবার রাতে সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ডাকাত সর্দার হামিদুল ইসলাম (৪০), আমিরুল ইসলাম ওরফে রাজু (৪৫), জাহিদ মিয়া (৪০), মনিরুল ইসলাম ওরফে রতন ড্রাইভার (৩২), আজিজুল হক ওরফে আজিজ ড্রাইভার (৪৮), ইস্রাফিল (৩০), সজল মিয়া (৩০) ও রাশিদা বেগম (৩৩)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, গত ২ জুলাই রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কলাতিয়া নিশানবাড়ী এলাকায় অ্যাপিজ গ্লোবাল লিমিটেড কারখানায় একদল ডাকাত হানা দেয়। এসময় ১৪ থেকে ১৫ জনের ডাকাত দল তিনজন সিকিউরিটি গার্ডের হাত-পা বেঁধে কারখানার ভেতরে থাকা মূল্যবান কম্বল, কোটিং ফেব্রিক্স, রেইনকোট ফেব্রিক্স, মেস কাপড়, স্ট্যান্ড ফ্যান, সিলিং ফ্যান দুটি কাভার্ড ভ্যানে উঠিয়ে নিয়ে যায়। চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনায় ফ্যাক্টরির মালিক আবুল কালাম আজাদ বাদি হয়ে মামলা দায়ের করলে মাঠে নামে পুলিশ। তদন্তের ভিত্তিতে আটজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি লুট হওয়া সব মালামাল উদ্ধার এবং দুটি কভার্ডভ্যান জব্দ করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, লুণ্ঠিত মালামাল বিক্রির জন্য রাশিদা বেগমের স্বামী মোশাররফের গুদামে রাখা হয়েছিল। মোশাররফ পলাতক থাকলেও তার স্ত্রী রাশিদাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যেই গুদাম থেকে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া এসব পণ্যের আনুমানিক মূল্য ৮২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।
গ্রেপ্তারকৃতরা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, তারা সকলে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা ছদ্মবেশে ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন কারখানার মালামাল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেকি করে। যেসব ফ্যাক্টরির অবস্থান নির্জন এলাকায় এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল, সেসব কারখানাকে তারা টার্গেট করে ডাকাতি করে। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অ্যাপিজ গ্লোবাল লিমিটেডের মালিক আবুল কালাম আজাদও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পুলিশ-বিজিবিসহ বিভিন্ন সংস্থার পোশাকও তার কারখানায় তৈরি হত। দুই বছর আগে কারখানাটি খোলা হয়। তবে আমার দুর্বলতা রয়েছে। সিসিক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু লাগানো হয়নি।