নিজস্ব প্রতিবেদক
হত্যা, অস্ত্র মামলাসহ ১৩ মামলার আসামির স্ত্রীকে বিয়ে করায় জামিনে বেরিয়ে বন্ধু রাকিব হোসেনকে (২৫) খুন করে রাসেল হোসেন ওরফে কাটা রাসেল (৩১)। গত ১ জুন নাটোর রেলওয়ে স্টেশনের ৩নং ওভার ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাসেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডি জানায়, গত ২৩ মার্চ দস্যুতার ঘটনায় নাটোর সদর থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে যান রাসেল। হাজতে থাকাবস্থায় রাসেলের স্ত্রী সাথী তাকে ডিভোর্স দিয়ে রাসেলের বন্ধু রাকিবকে বিয়ে করেন।
এ খবর পৌঁছে যায় রাসেলের কাছেও। এরপর জামিনে মুক্ত হয়ে ছুরিকাঘাতে খুন করেন রাকিবকে।
মঙ্গলবার দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর এসব তথ্য জানান।
সিআইডি জানায়, গ্রেপ্তারকৃত রাসেল উচ্ছৃঙ্খল যুবক। প্রায় ৭ বছর আগে নিজেদের পছন্দে চক বৌদ্ধনাথপুর এলাকার লাবণ্য সিদ্দিকা সাথী ও রাসেল বিয়ে করেন। তাদের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে।
গত ২৩ মার্চ দস্যুতার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় নাটোর সদর থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে ছিলেন রাসেল। এরপর তাকে ডিভোর্স দিয়ে রাকিবকে বিয়ে করে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন সাথী। রাসেল ডিভোর্সের সংবাদ পেয়ে বন্ধু থেকে শত্রুতে পরিণত হওয়া রাকিবের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার ছক কষতে থাকেন।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গত ৩১ মে রাকিব জামিনে মুক্তিলাভ করে এলাকায় এসে খুঁজতে থাকেন রাকিবকে। ১ জুন দুপুর ১২টার দিকে কৌশলে রাকিবকে ডেকে নিয়ে নাটোর রেলওয়ে স্টেশনের ৩নং ওভার ব্রিজের ওপর যান। সেখানে রাসেলকে দেখা মাত্রই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন রাকিব। এ সময় রাসেল সঙ্গে থাকা লোকদের সহায়তায় রাকিবের পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যান।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা রাকিবকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হত্যার ঘটনার পর নিহত রাকিব হোসেনের বড় ভাই মো. শাকিল হোসেন গ্রেপ্তার রাসেলকে প্রধান আসামি করে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তার রাসেল ওরফে কাটা রাসেলের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র আইন, দস্যুতা, চাঁদাবাজি, চুরি, নারী নির্যাতন ও অন্যান্য ধারায় মোট ১৩টি মামলা রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
এসব মামলার মধ্যে ২টি মামলা তদন্তাধীন ও অবশিষ্ট ১১টি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।