মতলব উত্তর প্রতিনিধি :
মতলব উত্তরের চরওয়েষ্টার সহ চরান্ঞ্চল বাসীর এক আতংকের ফরহাদ। তার ভয়ে রাতদিন ভয়ে তটস্থ থাকে চরের বেশকিছু এলাকার সাধারণ মানুষ। প্রকাশ্য দিবালোকে চরে এবং পদ্মা – মেঘনা নদীতে নৌপথে চুরি ডাকাতি সহ এমন কোনো অপরাধ নাই যে সে করে না। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ চর এলাকার সাধারণ মানুষ। সে চর ওয়েস্টার গ্রামের মৃত কুদ্দুস ছৈয়ালের পুত্র। তার সঙ্গে থাকা অবৈধ অস্ত্র উঁচিয়ে প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অসহায় মানুষের কাছে চাঁদা দাবী করে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে রবিউল হাসান নামে একজন কে বেদম প্রহার ও জখম করে। ফরহাদ গংদের বিষয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলা গ্রহণ না করায় গতকাল বুধবার (১৬ মার্চ) চাঁদপুর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করে বিচার চান আহত রবিউল হাসানের পিতা জসিম উদ্দিন।
মামলার অভিযোগে জানা যায় মতলব উত্তর উপজেলার চরওয়েষ্টার গ্রামের জসিম উদ্দিন খার পুত্র রবিউল হাসান চরাঞ্চলে টলি গাড়ী ভাড়ায় চালাইয়া মালামাল বহন করে। জসিম উদ্দিন খাঁ নিজ বাড়ীর পাশে স্যানেটারী ব্যবসা দিয়া জীবিকা নির্বাহ করে। চরওয়েষ্টার গ্রামের মৃত কুদ্দুছ ছৈয়াল এর পুত্র ফরহাদ হোসেন স্থানীয়ভাবে একজন সন্ত্রাসের গডফাদার হিসাবে পরিচিত। বিগত ২৮ ফেব্রুয়ারী সোমবার বিকাল ৩টায় চরওয়েষ্টার গ্রামের ফরহাদ হোসেন পিতা-মৃত কুদ্দুছ ছৈয়াল, আমজাদ হোসেন পিতা-মৃত রসুল বেপারী, শাহাদাৎ হোসেন পিতা- মৃত রসুল বেপারী, মুক্তার হোসেন পিতা- মৃত রসুল বেপারী, রুপচাঁন পিতা- মোঃ আলি মিয়া, রুবেল পিতা- মৃত নজিল বেপারী, কাওছার পিতা-জালাল উদ্দিন বকাউল, শাহজাহান পিতা- ছলেমান ছৈয়াল, মিঠু পিতা- মৃত অলি বেপারী, জাহাঙ্গীর পিতা- মৃত নজিল বেপারী, বে আইনী জনতাবদ্ধ হয়ে সশস্ত্র অবস্থায় জসিম উদ্দিন এর বাড়ীতে এসে তার নিকট বল প্রয়োগ পূর্বক তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় মুক্তার হোসেন এর নির্দেশে সকলে মিলে জসীম উদ্দিনকে এলোপাথারি কিল ঘুষি চর থাপ্পর মারিতে লাগিলে আসপাশের লোকজন আসিয়া রক্ষা করে। ফরহাদ হোসেন তার কোমরে থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলি করার ভয় দেখিয়ে উপস্থিত সবাইকে মারাত্মক ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে পরবর্তী ২ঘন্টার মধ্যে তাদের দাবীকৃত তিন লক্ষ টাকা চাঁদা না দিলে জসিম উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজনকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলিবে। জসিম উদ্দিন চাঁদার টাকা না দেওয়ায় চরওয়েষ্টার গ্রামের অস্ত্রধারী নৌ ডাকাত ফরহাদ হোসেন, আমজাদ হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন, মুক্তার হোসেন , রুপচাঁন, রুবেল , কাওছার, শাহজাহান, মিঠু, জাহাঙ্গীর একত্রে মিলে ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিনের বসত ঘর ভাঙ্গিয়া নিতে আসে। জসিমের পুত্র রবিউল হাসান বাঁধা দিলে ফরহাদ তার হাতে থাকা অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করে গুলি করার ভয়-ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে। উক্ত নামধারী সকলে জসিম উদ্দিনের বসত ঘর ও বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এসময় জসিম উদ্দিন এর পুত্র রবিউল হাসানকে খুন করার উদ্দেশ্যে মারাত্মক জখম করে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ফরহাদ ও মুক্তার সহ উল্লিখিত নামধারী সবার কাছে অবৈধ অস্ত্র থাকায় এলাকায় কেউ ভয়ে আতংকে থাকে । তারা মেঘনা নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন, বাল্কহেড থেকে চাঁদাবাজি সহ নদীতে সকল অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত। তাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র ও চাঁদাবাজির শেল্টার
দাতা হিসেবে নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন চক্রের অন্যতম হোতা ও একাধিক মামলার আসামি কাজী মতিনের নাম বলে ঐ এলাকার সাধারণ মানুষ। তার ইশারায় ফরহাদ গংরা নদীবেষ্টিত চর এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে।
এলাকার লোকজন জানায়, ফরহাদ ও মুক্তার হোসেন কে মোটা অংকের মাসোহারা দিয়ে নদীতে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বালু উত্তোলনকারী চক্র। ঘটনার বিষয় এবং মামলার বিষয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, ফরহাদ গংরা আমার বাড়িঘর ভেঙে ক্ষান্ত হয়নি। তারা প্রতিনিয়ত আমাকে ও পরিবারের সকলকে হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমার পরিবারের কেউ বাড়ি থাকতে পারছি না। আমি উক্ত সন্ত্রাসীদের বিচার চাই। আমাকে তারা মেরে ফেলতে পারে। আমি প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
অবৈধ অস্ত্র উঁচিয়ে চাঁদাবাজি ও নৌ পথে ডাকাতি বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে অভিযুক্ত ফরহাদ টেলিফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি মিথ্যা।
প্রকাশ্য দিবালোকে অবৈধ অস্ত্রের মহড়া বিষয়ে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল বলেন, উক্ত ঘটনার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করে নাই, তাই আমার জানা নেই। তবে কেউ অভিযোগ করলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।