মানিক দাস // যাত্রী বেশে লঞ্চের অন্য যাত্রীদের কৌশলে অজ্ঞান করে সবকিছু লুটে নেন বরিশাল গৌরনদী থানার হোসনাবাদ এলাকার মৃত জয়নাল শিকদারের ছেলে রোজন শিকদার শাওন। এটাই হচ্ছে তার পেশা। আর টার্গেট থাকে সহজ সরল লঞ্চ যাত্রিদেরকে । জুলাই মাসে লঞ্চের যাত্রী রাবেয়া বেগম ও আমিন খান নামে এক যুবককে চেতনা নাশক ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে তাদের সাথে থাকা স্বর্ণ ও নগদ টাকা নিয়ে যায় অজ্ঞান পাটির সদস্য শাওন। ওই ঘটনায় তাকে আটক করে চাঁদপুর নৌ থানা পুলিশ।
২৬ আগস্ট শনিবার রাতে ঘটনার শিকার নারীর সহযোগিতায় চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে শাওনকে আটক করতে সক্ষম হয় নৌ থানা পুলিশ।
গতকাল ২৭ আগস্ট রবিবার বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান। এই ঘটনায় চাঁদপুর নৌ থানায় মামলা দায়ের করেন ঘটনার শিকার নারী রাবেয়া বেগম।
মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, গত ২৪ জুলাই রাত সাড়ে ১২টায় চাঁদপুর থেকে এমভি সুন্দরবন-১২ নামক লঞ্চ যোগে তিনি বরিশাল যাচ্ছিলেন। বাদী রাবেয়া বেগম (৫০) চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের তেতুল তলা মিজি বাড়ীর সফিক মিজির স্ত্রী। রাবেয়া বেগম তার সাথে ছিল ভাতিজা মো. আমিন খান (২০)। বরিশাল সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভাই ওসমান খানের স্ত্রী নুপুরকে দেখতে যাবার জন্য তারা বরিশাল যাচ্ছিল । এর মধ্যেই লঞ্চে পরিচয় হয় মলম পার্টির সদস্য শাওনের সাথে। রাবেয়া বেগম বুঝতে পারেননি শাওন মলম পার্টির সদস্য। তাই খুব কম সময়ে বিভিন্ন কথা বলে ও সহযোগিতার কথা বলে সে রাবেয়া এবং আমিনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে। এরপর তাদেরকে চেতনা নাশক ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে। রাবেয়া বেগম জানান, অজ্ঞান হওয়ার পর তার পরনে থাকা ৫ আনা ওজনের কানের দুল, গোল্ড প্লেটের তৈরী চেইন, ভাইয়ের স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সাথে থাকা ৬৮ হাজার টাকা শাওন নিয়ে যায়। লঞ্চের লোকজন সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে নিয়ে ভর্তি করান। সেখানেও প্রতারক শাওন উপস্থিত হয়। চিকিৎসার কথা বলে সেখান থেকে বাড়ির ঠিকানায় মোবাইল করে তার ভাই ওসমান খান থেকে ৩ হাজার টাকা, ভাতিজা কাশিম খান থেকে ২ হাজার টাকা ও রাবেয়ার ছেলে মিলন হোসেনের কাছ থেকে ১হাজার টাকা বিকাশে নিয়ে যায় শাওন। এই ঘটনার পর বেশ কয়েকদিন চিকিৎসা নিয় সুস্থ হওয়ার পর প্রতারক ও মলম পার্টির সদস্য শাওনকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে খুঁজতে থাকে । অবশেষে ২৬ আগস্ট দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় শাওনকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে দেখতে পেয়ে নৌ পুলিশের সহযোগিতায় তাকে আটক করতে সক্ষম হই। তার কাছ থেকে পুলিশ চেতনা নাশক ওষুধ (ট্যাবলেট) উদ্ধার করে।
চাঁদপুর নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান বলেন, আসামী রোজন শিকদার শাওন রাত থেকে বিকেল পর্যন্ত নৌ থানা হেফাজতে ছিল। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে জেল হাজতে পাঠানোর জন্য চাঁদপুর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।