আলমাস হোসেন : ঢাকা জেলা প্রতিনিধি
সাভারের আশুলিয়া থেকে ৭ বছরের শিশু আরাফাত হোসেনকে অপহরণের ৩ দিন পর কুড়িগ্রাম হতে উদ্ধার করেছে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল। এ সময় অপহরণকারী মোঃ শফিকুল ইসলাম (৩৬) কে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানাধীন বোয়ালমারীচর এলাকা থেকে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গত ২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া মীরবাড়ি এলাকা থেকে শিশু আরাফাতকে অপহরণ করা হয়।
উদ্ধার ৭ বছরের শিশুর আরাফাত রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার পাক্কা বাড়ি এলাকার মৃত মারুফ হোসেনের ছেলে৷ তার মায়ের নাম আছমা খাতুন। আছমা খাতুন ছেলেকে নিয়ে জামগড়ার মিয়া বাড়ি এলাকায় ভাড়া থাকতেন।
গ্রেপ্তার অপহরণকারী শফিকুল ইসলাম (৩৬) কুরিগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানার গৌলক মন্ডল এলাকার মৃত আইনুল হকের ছেলে। তিনি শিশু আরাফাতের পরিবারের প্রতিবেশী।
ঘটনার বিবরণে র্যাব জানায়, গত ২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া মীরবাড়ি এলাকা থেকে শিশু আরাফাত অপহৃত হয়। পরবর্তীতে অপহরণকারী শিশুটিকে আশুলিয়া, বাইপাইল হয়ে বাসযোগে কুড়িগ্রাম নিয়ে আটকে রাখে। পরে অপহরকারী শিশুর মাকে ফোনে ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে এবং উক্ত টাকা না দিয়ে র্যাব বা পুলিশকে জানালে শিশুকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ৬ অক্টোবর সকালে র্যাব-১৩ এর সহায়তায় কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানাধীন বোয়ালমারীচর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত শিশু আরাফাত হোসেনকে উদ্ধার ও অপহরণকারী মোঃ শফিকুল ইসলাম (৩৬) কে গ্রেফতার করা হয়।
আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, শিশুর মা একজন গামের্ন্টস্ কর্মী এবং স্বামী পরিত্যাক্তা। আসামীর সাথে শিশুর মায়ের গত ৬/৭ মাস পূর্বে মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় হয় এবং পরিচয়ের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্কের ফলে আসামী শিশুদের বাসায় যাতায়াত ছিল। এক পর্যায়ে আসামী শিশুর মাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আসামীর পূর্বের স্ত্রী-সন্তান থাকায় শিশুর মা তাকে বিয়ে করবে না মর্মে জানায়।
এরপর আসামী অপহৃতের মাকে বিয়ের জন্য বিভিন্নভাবে রাজি করার চেষ্টা করতে থাকে। এতে রাজি না হলে আসামী ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে শিশু আরাফাতকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২ অক্টোবর শিশুর মা কাজে থাকার সুযোগে তাকে আইসক্রিম কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাসা থেকে বের করে জোরপূর্বক অপহরণ করে। পরে শিশুর মা র্যাবের অধিনায়ক বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযানে নামে র্যাব।
র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গ্রেফতার আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এইরুপ শিশু অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।