কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
মুরগির খামারের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ চৈনপুর এলাকাবাসী।
কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর উপজেলার ২২ নং টনকি ইউনিয়ন পরিষদ চৈনপুর গ্রামে মুরগির খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। অভিযোগ উঠেছে, নীতিমালা উপেক্ষা করে গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ চৈনপুর গ্রামের দেওয়ান মিয়া ছেলে হাসান মিয়া
খামারটি স্থাপন করেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামবাসী।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চৈনপুর গ্রামের দেওয়ান মিয়া ও তার ছেলে হাসান মিয়া গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্রয়লার মুরগির খামার স্থাপন করেন। বর্তমানে খামারে ৪ হাজার মুরগি রয়েছে। মুরগির বিষ্ঠার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে খামারের চারদিকে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হতে হবে।ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনগণের ক্ষতি হয় এমন স্থানে খামার স্থাপন করা যাবে না।
গত রবিবার চৈনপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খামারটির আশপাশে মুরগির বিষ্ঠা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। খামারের চারপাশে বসতবাড়ি। এসব বাড়ি থেকে তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহের স্ত্রী করিমা বেগম বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই খামার। বিষ্ঠা থেকে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। আশপাশে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। রমজান মাস। রোজা রাখা কস্ট হচ্ছে। সারাদিন দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ লাগছে। সরকারি জায়গা দখল করে এ খামার করেছে। হাসান মিয়া আমার ঘরে আগুন জ্বালিয়ে পুরিয়া নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেয়। এরা সরকারি পুকুর দখল করে রেখেছে। বাড়ীর গাছ কর্তন করে নিয়ে যায়। আমি প্রতিবাদ জানায় এজন্য মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমার পরিবার ভয়ে উৎকন্ঠা জীবন যাপন করছি। আতংকিত আছি।
কেজি স্কুল ছাত্ররা বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে খামারটি সরানোর জন্য গত বছরের ০৩ এপ্রিল সোমবার ইউএনও কাছে অভিযোগ দিয়েছে করিমা বেগম। আশা করছি দ্রুতই যথাযথ প্রয়োজন ব্যাবস্থা নিবেন মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসন।
চৈনপুর গ্রামের আওয়ামী লীগের নেতা আনিছুর রহমান বলেন, আমি মোমেন, জামানকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মুরগী খামারে দুগন্ধ হবেই। আমি কি বলবো। উভয় পক্ষই আমার আপনজন। ঝগড়াঝাটি যেন না হয় সে দিকে খেয়াল রাখছি।
ইউপি সদস্য আমির হোসেন বলেন, খামারটি নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে যাতে দুর্গন্ধ কম ছড়াচ্ছে।
দেওয়ান মিয়া ছেলে হাসান বলেন, মুরগী ঔষধ ও বিষ্ঠায় একটু গন্ধ তো হচ্ছে। পরিস্কার করছি। তার পরও গন্ধ আসছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরোও বলেন,সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত করা হয় নাই। আমি নিজের জমিতে মুরগির খামার করেছি। সরকারি জায়গায় বা পুকুর দখল করি নাই। আমি তাদের বাড়ীঘর পুরিয়া হুমকি দেই নাই।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
(ইউএনও) আলাউদ্দিন ভূঞা জনী বলেন, আবেদন পেয়েছি। অচিরেই উভয় পক্ষের ডেকে শুনানি করা হবে।অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুরাদনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন,খামারটি স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় অবস্থিত খামারের বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা আছে কি না দেখবো । খামারটি স্থাপনের ক্ষেত্রে জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ মানা হয়েছে কি না জানবো।নীতিমালা উপেক্ষা করে খামার স্থাপন করা হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।