জাহাঙ্গীর গাজী : চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের মধ্য মদনা গ্রামে এক বিধবাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন পার্শ্ববর্তী বাড়ির মৃত মনা গাজীর ছেলে রহমান বেপারী (৬০) চেয়ারম্যান প্রার্থী। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত শুক্রবার রাত আনুমানিক ৯ঘটিকার সময় রহমান বেপারী তার অপর এক সঙ্গী বিল্লাল গাজীকে নিয়ে মৃত বসির উল্লাহ গাজীর স্ত্রী রওশনারা বেগম (৪৫) তার বসত ঘরে যায়। কিছুক্ষণ কথা বলার পর রহমান বেপারী তার সাথে থাকা সঙ্গী বিল্লাল গাজীকে চা আনার জন্য দোকানে পাঠায়। তার সঙ্গী চা আনার জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার পর রহমান বেপারী কৌশলে ঘরের দরজা আটকিয়ে রওশনারা বেগমকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। রওশনারা বেগম তার হাত থেকে বাচার জন্য চিৎকার দিতে থাকলে তার ছেলে জহিরের স্ত্রী রেখে বেগম তার মেয়ে ফাতেমাসহ আরো অনেকে এসে রহমান বেপারীর হাত থেকে রওশনারাকে উদ্ধার করে রহমান বেপারীকে আটক করে ওই ঘরে।
এরই মধ্যে রহমান বেপারী তার মোবাইল থেকে তার স্ত্রী সন্তান ও তার আত্মীয় স্বজনদের খবর দিলে তাহারা অনেক লোকজন নিয়ে রাত্র অনুমান ১২ঘটিকার সময় রওশনারার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে রওশনারার ছেলে জহির ও তার স্ত্রী রেখা বেগম তার মেয়ে ফাতেমাকে ব্যাপক মারধর করে তাহারা জোর পূর্বক রহমান বেপারীকে নিয়ে যায় এবং ঘরে থাকা আসবাব পত্র ভাংচুর করে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন রওশনারা ও তার ছেলে জহিরকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার জহিরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় এবং রওশনারাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। সে বর্তমানে চাঁদপুর ২৫০ শর্য্যা বিশিষ্ট্য জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এই বিষয়ে রওশনারা বলেন, তাহাকে রীতিমতো হাসপাতালে রহমান বেপারীর বিভিন্ন লোক দ্বারা হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য তা না হলে বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যাবে। সে বর্তমানে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে হাসপাতালে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছে তার ছেলে জহির বলেন, শুক্রবার রাত্রে ঘটনার সময় সে মদিনা মার্কেটে ছিল। হঠাৎ চিৎকারের আওয়াজ শুনে সে দৌড়ে বাড়িতে এসে দেখে রহমান বেপারী তার মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করিয়াছে। তারপর আমরা রহমান বেপারীকে ঘরের মধ্যে আটক করে রেখে আমাদের আত্মীয় স্বজনদেরকে খবর দেই। আমাদের আত্মীয় স্বজন আসার পূর্বেই রহমান বেপারীর লোকজন আমাদের ঘরে এসে হামলা করে আমাদের ঘরের আসবাব পত্র ভাংচুর করে তাকে নিয়ে যায়।
এই সময় আমি তাদেরকে বাধা দিতে গেলে রহমান বেপারীর ভাতিজা শাহাদাতের ছুরির আঘাতে আমার হাতের আঙ্গুল কেটে যায়। তার মেয়ে র্ঝণা আমার ছোট ফাতেমাকে চুলের মুঠি ধরে এলো পাতাড়ি মেরে আহত করে। তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম আমার স্ত্রী রেখাকে অনেক মেরেছে। এই বিষয়ে জানার জন্য রহমান বেপারীর বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায় না তার মেয়ে র্ঝণা প্রথমে বলে, তার বাবা অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে পরে জানায় তার বাবা চাঁদপুরে আছে। রাত্রের ঘটনা সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে প্রথমে মুখ খুলতে চায়নি পরে বলেন, গত শুক্রবার রাত্রে তার বাবা রহমান বেপারী, বিল্লাল গাজীসহ কিছু কাগজ পত্র নিয়ে রওশনারার বাড়িতে যায় স্বাক্ষর করানোর জন্য। কিছুক্ষণ পর তার বাবা বাড়িতে ফোন করে বলেন, তাকে সেই বাড়িতে আটক করেছে তারপর আমরা সবাই মিলে আমার বাবাকে ছাড়িয়ে আনার জন্য সেই খানে গেলে শত শত লোক দেখতে পাই। অনেক কষ্টে আমরা আমার বাবাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে আনি। বর্তমানে আমার বাবা চাঁদপুরে আছে।
এই বিষয়ে রহমান বেপারী প্রতিনিধিকে বলেন, মামলা সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র নিয়ে রওশনারা বেগমের স্বাক্ষরের জন্য ঘরে গেলে আমাদের কে বসে বলে সে কাগজপত্র পড়ে নিজে স্বাক্ষর করে এবং আমাদেরকে ঘরে বসিয়ে অন্যদের স্বাক্ষরের জন্য বাহিরে যায় কিছুক্ষণ পর ফেরৎ এসে বলেন, তাদের স্বাক্ষর দিতে একটু সময় লাগবে আপনারা একটু বসেন এবং আমার সাথে থাকা বিল্লাল গাজীকে বলে, আপনি দোকান থেকে চা নিয়ে আসুন প্রথমে বিল্লাল যেতে রাজি না হলেও পরে বিল্লাল চা আনতে দোকানে গেলে রওশনারা বেগম নিজেই ঘরের দরজা বন্ধ করে একটি দা হাতে নিয়ে বলে, রহমান আজ তোর রক্ষা নেই আমি আজ তোকে কেটে ফেলব এই বলে হুমকি দিলে আমি ভয় পেয়ে যাই এবং আমি সাথে সাথে বাড়িতে ফোন করে ঘটনা জানাই। আমার ফোন করার পর রওশনারা জোরে জোরে চিৎকার করিতে থাকলে তার ঘরের আশে-পাশে লোকজন এসে জড়ো হয়ে যায়। আমার বাড়ির লোকজন আসিয়া স্থানীয় চৌকিদা হারুণসহ আমার ভাতিজা শাহাদাত, বাচ্চু মিয়া রাঢ়ী, ফয়সাল হোসেন বেপারী, শাহীন বেপারী, আমার মেয়ে র্ঝণা ও আমার স্ত্রী ফাতেমাসহ এলাকার শত শত লোক এসে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। রওশনারা বেগমের দা এর আঘাতে আমার হাত কেটে যায়। আমি চিকিৎসার জন্য চাঁদপুরে এসেছি। এই বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেছি। রওশনারা বেগম জানায়, সেও মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।