ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি: ফরিদগঞ্জে যৌন লালসার অভিযোগে স্ত্রীকে তালাক দিলেন প্রবাসী স্বামী। অভিযুক্ত একজন হলেন রাজনৈতিক দলের কর্মী । তার বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে। তার বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে। নগ্ন ছবি তুলে নারীদের ব্লাকমেইল, অর্থ আত্মসাত, চুরি ও প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়া প্রেমের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
তবে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে হয়রানির করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক এ সকল অভিযোগ করেছে বলে বাকী বিল্লাহ নামের ওই নেতা দাবি করেন।
ফরিদগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত পৃথক তিনটি অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উত্তর রাজাপুর গ্রামের মিঝি বাড়ির নূর মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহর সাথে একই বাড়ির এক বিবাহিত নারীর সাথে পরকীয়া সর্ম্পক চলে আসছিলো। সম্পর্কের দিক থেকে তারা উভয় চাচি-ভাতিজা।
১২ অক্টোবর রাতে বাকী বিল্লাহ পূর্বের ন্যায় তার ঘরে প্রবেশ করে। এসময় বাড়ির লোকজন টের পেয়ে ওই ঘরের বাহিরের দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। পরে আশেপাশের লোকজন এসে দরজার তালা খুলে ঘরের ভেতর প্রবেশ করতে চাইলে ইতি সকলকে বাধা দেয়। অনেক চাপে পড়ে দরজা খুলে দেয়ার পর ঘরের ভেতরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে বাকী বিল্লাহকে পাওয়া যাচ্ছিলনা।
পরে আলমারির তালা ভেঙ্গে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে কিছুটা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ ঘটনার জেরে প্রবাসী ইকবাল হোসেন বতু তার স্ত্রী শাহানাজ আক্তার ইতিকে তালাক দেয়। তালাক নামায় ছাত্রলীগ নেতা বাকী বিল্লাহর সাথে তার স্ত্রীর অনৈতিক শারীরিক সর্ম্পকের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসর্ম্পক দীর্ঘ দিনের বলে তিনি দাবি করেন।
এ সর্ম্পকে প্রবাসী ইকবাল হোসেন বতুর বৃদ্ধ পিতা.হাজী আব্দুস সোবহান ক্রাইম এ্যাকশনকে বলেন, আমার ছেলের স্ত্রী শাহানাজ আক্তার ইতির সাথে বাকী বিল্লাহর অবৈধ সর্ম্পক ছিলো। তারা সর্ম্পকে চাচি-ভাতিজা হয়। সকল নষ্টের মূল বাকী বিল্লাহ। তাকে বিভিন্নভাবে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে আমার ছেলের স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সর্ম্পকে জড়িয়েছে। তার কারণে আজ আমার ছোট্ট নাতি আজ মা ছাড়া হয়েছে।
তিনি আরোও বলেন, ১২ অক্টোবর রাতে আমি পাশের কক্ষে ঘুমাচ্ছিলাম। আশ-পাশের লোকজনের ডাকা-ডাকিতে আমি ঘুম থেকে উঠি। পরে বাকী বিল্লাহকে অচেতন অবস্থায় আলমারির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ সময় শাহানাজ আক্তার ইতি আত্মহত্যা করতে যায়। পরবর্তীতে আমার প্রবাসী ছেলে বতু কোর্টের মাধ্যমে তার স্ত্রী ইতিকে তালাক দেয়। অপরদিকে শাহানাজ আক্তার ইতি ৭ নভেম্বর ফরিদগঞ্জ থানায় বাকী বিল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বাকী বিল্লাহ সু-সর্ম্পকের ফাঁদে ফেলে তার ছবির সাথে অশ্লীল ছবি সংযোজন করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় সে আমার সাথে যৌন সর্ম্পক করার চেষ্টা চালায়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করা হয় ।
এদিকে একই বাড়ির মিজানুর রহমানের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে বাকী বিল্লাহর বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় আরেকটি অভিযোগ করে। অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়, শাহনাজ আক্তার ইতি তার অগোচরে জানালা দিয়ে কিছু ছবি ধারণ করে। পরবর্তীতে কৌশলে বাকি বিল্লাহ এ ছবি গুলো তার মোবাইলে সংরক্ষণ করে।
১২ আক্টোবর বাকী বিল্লাহকে জনগণ হাতে নাতে আটকের পর থেকে সে আমার ছবির সাথে অশ্লীল ছবি সংযোগ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিবে ও আমার জানমালের ক্ষয়ক্ষতির হুমকি দিয়ে আসছে ।
এছাড়া সে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। এ সর্ম্পকে তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মমিন বলেন, বাকী বিল্লার বিরুদ্ধে নারীর ছবি ধারণ করে ব্লাক মেইল ও প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সর্ম্পকসহ বিভিন্ন বিষয় প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা বেরিয়ে এসেছে। এনিয়ে ওসি স্যার বাদী-বিবাদী সকল পক্ষকে নিয়ে থানায় বসে তারপর আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।
এ সর্ম্পকে বাকী বিল্লাহ বলেন, আমি একজন শিক্ষিত লোক। ষড়যন্ত্র করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। তবে ছবি তুলে ব্লাক মেইল,পরকীয়াসহ বিভিন্ন প্রশ্নের সঠিক জবাব তার কাছ থেকে পাওয়া য়ায়নি।