রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : সরকার দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। তারই আলোকে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি সমাজের হতদরিদ্র মানুষের জন্য কাজ করে চলেছে।এরই ধারাবাহিকতায় সরকার সারাদেশ থেকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যে যার সামর্থ্যের মধ্যে থেকে প্রশাসনকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান। কারণ অন্যান্য জেলার মতো রাঙ্গামাটিতে বড় ধরনের কোনো শিল্প কারখানা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই বড় বড় ব্যবসায়ী যারা আছে তারাই ভিক্ষুকমুক্ত রাঙ্গামাটি গড়তে এগিয়ে আসতে হবে।
রাঙ্গামাটি জুরাছড়ি উপজেলাকে সম্পূর্ণ ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পার্বত্য জেলা পরিষদ বিশ্রামাগারে উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান এসব কথা বলেন।
এসময় রাঙ্গামাটি জুরাছড়ি উপজেলার ৬জন ভিক্ষুককে স্থায়ী পুর্নবাসনের মাধ্যমে ভিক্ষুক মুক্ত এলাকা ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান।৬ জন ভিক্ষুককে সেলাই মেশিন, গবাদি পশু, দোকান ঘর,ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয় এবং ভবিষ্যতে সুদ মুক্ত ঋণ, খাদ্য বান্ধব, ভিজিডি, ভিজিএফ কর্মসূচীর অন্তর্ভুক্ত করণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান,এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জুরাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ক্যানন চাকমা,বনযোগীছড়া চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা,মৈদং ইউপি চেয়ারম্যান সাধনা নন্দ চাকমা, উপজেলা চেয়ারম্যান উদয় জয় চাকমাসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।
বনযোগীছড়া ইউনিয়নের আনন্দ পাড়ার বামন চিত্তিময় চাকমা কোনরকমে মাধ্যমিক (এস এস সি) গন্ডি পেরিয়ে পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে পড়াশোনা হয়ে উঠেনি তার। অভাবের তাড়নায় ভিক্ষার জীবন বেছে নিতে হয়েছে তাকে।শুধু সে নয় জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের শেফালি চাকমা। স্বামী বহু আগে মারা গেছেন। বাম পা নেই শারীরিক প্রতিবন্ধী শেফালি চাকমা। তার দুই সন্তান নিয়ে শীলছড়ি বাজারের পূর্ব দিকে ভাঙ্গা ঘরে বসবাস করে। ভিটেমাটি নেই তার।অভাবের কারণে তাকেও ভিক্ষার জীবন বেছে নিতে হয়েছে।জীবন বাঁচিয়ে রাখার মায়ায় অভাবের এমনি অভিশপ্ত জীবন বেছে নিয়েছে বনযোগীছড়া ইউনিয়নের দূর্গামনি চাকমা,মায়াদেবী চাকমা,জুরাছড়ি ইউনিয়নের রেনুকা চাকমা, অন্ধ প্রতিবন্ধী কমল চন্দ্র চাকমা।তারা সবাই ভিক্ষা জীবন ছেড়ে অাত্মসম্মান নিয়ে বাকী জীবন কাটিয়ে দিতে চাই।