সুমন আহমেদ :
দীর্ঘ ৫ বছর যাবত মতলব উত্তরে ছেংগারচর বাজারের অলি গলিতে ভ্যানে করে স্ত্রী ও সন্তানদের দু মুটো ভাত ও কাপড় জোগাতে দিন ও রাতে টাটকা গরম বাদাম, ছোলা ও শিমের বিচি বিক্রি করছেন মোঃ রনি শেখ। মতলব উত্তরে ৩২ বছরের রনি শেখ’কে বাদাম বিক্রেতা হিসাবে কম বেশি সবাই চেনেন। ভ্যানে চুলা বসিয়ে বাদাম ছোলা, শিমের বিচি ভেজে তা বিক্রি করেন সাধারণ মানুষদের কাছে। প্রতিদিন গড়ে লাভ হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
বাদাম বিক্রেতা রনি’র দেশের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার রাজাপুর গ্রামে হলেও ৫ বছর ধরে মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারের পাশে আদুরভিটি গ্রামে ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল, বিকাল ও রাত্র ১০ টা পর্যন্ত পৌরসভার ছেংগারচর বাজারের বটতলা মোড়, কলেজ রোড, থানা রোড, মধ্য বাজারসহ বাদাম ও ছোলা বিক্রি করেন রনি এটা তার নিত্যদিনের ব্যবসায়িক রুটিন একারনে রনি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সকল শ্রেনী মানুষের কাছে।
ছেংগারচর সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্র মোঃ নাঈম নামে এক বাদাম ক্রেতা বলেন, রনি ভাইয়ের কাছে গরম ভাজা বাদাম পাওয়া যায়। তাই অন্য কারো কাছ থেকে বাদাম নেই না। ঠান্ডা বাদামের চেয়ে গরম ভাজা বাদাম খেতেই বেশি মজা লাগে। ছেংগারচর বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ নাজিম দর্জি বলেন, সন্ধ্যায় ছেংগারচর বাজারে এই বাদাম বিক্রেতাকে পাওয়া যায়। প্রতিদিন ২০ টাকার বাদাম ১০ টাকার ছোলা কিনে নিয়ে বউ বাচ্চা নিয়ে খাই। শীতের মৌসুমে গরম এবং টাটকা ভাজা বাদাম আর ছোলা খেতে অনেক ভালো লাগে। কামাল নামে এক বয়স্ক ব্যক্তি বলেন প্রায় ৫ বছর এই বাদাম বিক্রেতা রনিকে চিনি। তার স্বভাব চরিত্র অনেক ভাল। নিয়মিত তার কাছ থেকে ১০/২০ টাকার কিছু না কিছু কিনে খাই।
বাদাম বিক্রেতা মোঃ রনি শেখ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ছেংগারচর বাজারে ভ্যানে করে মানুষের সামনে বাদাম, ছোলা ভেজে বিক্রি করি। ক্রেতাদের রুচি অনুযায়ী ভাজি। শীতের সময় বাদাম, ছোলা, শিমের বিচি অনেক বিক্রি হয়। কিন্তু গরম মৌসুমে বিক্রির পরিমাণ কমে আসে। বর্তমানে কাঁচা বাদাম, ছোলা ও শিমের বিচির দাম অনেক বেশি থাকলেও আমার গড়ে ৬/৭ শত টাকা লাভ হয়।
তিনি আরও বলেন, ১৭ বছর ধরে বাদাম বিক্রি করি, আগে নিজের এলাকায় বিক্রি করতাম। মতলব উত্তরে আত্নীয়ের বাসায় বেড়াতে এসে এলাকার পরিবেশ দেখে ভালো লেগে যায়, তারপর থেকে এখানেই থেকে যাই এই বাদাম বিক্রি করে আমি ২ সন্তানের লেখাপড়া ও সংসার চালাচ্ছি। এই বাদাম বিক্রি করেই আল্লাহর রহমতে পরিবার নিয়ে অনেক ভালো আছি।